দাউদকান্দি উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা ওসংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। এখানে ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলারমতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন কথ্য ভাষায় মহাপ্রাণধ্বনি অনেকাংশে অনুপস্থিত, অর্থাৎ ভাষা সহজীকরণের প্রবণতা রয়েছে। দেবিদ্বাররদাউদকান্দি, তিতাস, মেঘনা, হোমনা প্রভৃতি উপউপজেলার আঞ্চলিক ভাষার সাথেসন্নিহিত ঢাকা অঞ্চলের ভাষার, চৌদ্দগ্রাম ও লাকসাম উপউপজেলার আঞ্চলিক ভাষায়নোয়াখালি এলাকার ভাষার অনেকটাই সাযুজ্য রয়েছে। মেঘনা-গোমতী নদীর গতিপ্রকৃতির পাশে দাউদকান্দির মানুষের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা, সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
এই এলাকার ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায় যে দাউদকান্দির সভ্যতা বহুপ্রাচীন। এই এলাকায় প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও বৌদ্ধ বিহারেরধ্বংসাবশেষ প্রাচীন সভ্যতার বাহক হিসেবে দেদীপ্যমান। এছাড়াও এ এলাকায় কিছুক্ষুদ্র জাতিসত্বা বসবাস করে যাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে।সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে দাউদকান্দির অবদানও অনস্বীকার্য। সুরসম্রাট ওস্তাদআলাউদ্দিন খান, ওস্তাদ আয়েত আলী খান, ওস্তাদ আকবর আলী খান প্রমুখ ভুবনবিখ্যাত সংগীতজ্ঞ স্মৃতি বিজড়িত দাউদকান্দির ।দাউদকান্দির ওস্তাদ আফতাবউদ্দিনখান সরোদের মত দেখতে সুর সংগ্রহ যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। এছাড়াও তিনি মেঘডাবুর যন্ত্র নামে সুরযন্ত্রের স্রষ্টা। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান চন্দ্র সারংএবং ওস্তাদ আয়েত আলি খান আধুনিক সরোদ উদ্ভাবন করেন।দাউদকান্দির বাঁশের বাঁশিসমগ্র উপমহাদেশে প্রসিদ্ধ।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খান সৃষ্ট রাগ সঙ্গীত, হেমমত্ম দুর্গেশ্বরী, মেঘবাহার, প্রভাতকেলী, হেম বেহাগ, মদন মঞ্জরী রাগ এবং ওস্তাদ আয়েত আলী খানসৃষ্ট মিশ্র রাগ উপ মহাদেশের শাস্ত্রীয় গীতধারায় এখনও প্রবল প্রভাব রেখেচলেছে। ওস্তাদ আলী আকবর খান ১০টি নুতন রাগ সৃষ্টি করেন। এগুলো হলো রাগচন্দ্রনন্দন, গুরুমঞ্জরী, লাজবন্তি, মিশ্র শিবরঞ্জনী, ভুপমন্দ, মেধাবী, আলমগীরি, মলয়ালম স্মৃতি, কুশিযোগি এবং রাগ চৌরাঙ্গ কল্যাণ।
যেসব সরকারী সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা দাউদকান্দির কাজ করছে সেগুলো হলোঃ
* উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী, দাউদকান্দির
* বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, দাউদকান্দির উপজেলা শাখা
* সরকারী গণ গ্রন্থাগার, জজকোর্ট রোড,দাউদকান্দির
* স্থানীয় সরকার ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুদানপ্রাপ্ত সংস্থা বীরচন্দ্রনগর মিলনায়তন (টাউনহল)
* প্রভৃতি।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস